একশো টাকার ভাঙানি ।। তারাপদ রায়ের ছোটোগল্প

ভবানীপুরে তাঁর বাড়ির একতলার বাইরের ঘরে বসে আছেন সিদ্ধেশ্বর চক্রবর্তী মশায়। সিদ্ধেশ্বরবাবু ছাপোষা লোক, বেশ বৈষয়িক এবং হিসেবি। বিশেষ করে এখন তাঁকে খুবই হিসেব করে চলতে হচ্ছে, কারণ এই সম্প্রতি তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। ভবানীপুরের এই বাড়িটি পৈতৃক। দোতলা বাড়ি, একতলায় বসবার বা বাইরের ঘর। আশ্বিন মাস শেষ হতে চলেছে। এখন ভরা সন্ধ্যা। বাইরে একটু একটু ঠান্ডা ভাব। বিকেলে এক পশলা অদিনের বৃষ্টি হয়ে গেছে। ঘরের জানলা দরজা ভেজিয়ে দিয়ে সিদ্ধেশ্বর পুরনো একটা বেতের চেয়ারে গালে হাত দিয়ে বসে নানারকম হিসেব করছেন। ঘরে একটা পঁচিশ পাওয়ারের আলো টিমটিম করে জ্বলছে। হিসেব করতে করতে সিদ্ধেশ্বরবাবু মনে মনে বহু কথাও ভাবছেন। একই ছেলে তার, হিতেশ্বর। বাইশ বছর বয়েস হয়েছে। লেখাপড়ায় ভাল নয়, দুবার মাধ্যমিক দিয়েছে। কিন্তু চালাকচতুর, অতিরিক্ত চালাকই বলা যায়। তা ছাড়া ছেলের বন্ধুবান্ধবও মোটেই সুবিধের নয়। হিতেশ্বরের বন্ধুরা কেউই ভাল করে লেখাপড়া করেনি, তা ছাড়া তারা নানারকম বদমায়েসি করে, জুয়ো খেলে, গাঁজা মদ চরস হিরোইন-টিরোইন কী সব খায়। এসব ব্যাপারে একটা জিনিস সিদ্ধেশ্বরবাবুর খুব খটকা লাগে। তাদের আমল...